রাজশাহীতে গর্তে পড়া শিশু সাজিদ ৩২ ঘণ্টা পর উদ্ধার

রাজশাহীতে গর্তে পড়া শিশু সাজিদ ৩২ ঘণ্টা পর উদ্ধার
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

রাজশাহীর তানোরে অরক্ষিত নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদকে টানা ৩২ ঘণ্টার অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। বৃহস্পতিবার ১১ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

তিনি জানান, শিশুটিকে উদ্ধারের পর সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে। তবে সে জীবিত আছে কি না তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবুও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আশাবাদী।

কীভাবে ঘটে দুর্ঘটনা

বুধবার দুপুরে তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। সাজিদ তার মা ও ভাইয়ের সঙ্গে বাড়ির পাশের একটি খড়ঢাকা জমি পার হচ্ছিল। খড়ের নিচে একটি পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের গর্ত আছে তা তার মা জানতেন না। হাঁটার সময় হঠাৎ সাজিদ নিচে পড়ে যায়। পেছন থেকে মা মা চিৎকার শুনে মা ফিরে দেখেন তার সন্তান আর সামনে নেই। খড় সরাতেই দেখা যায় খোলা মুখে থাকা গভীর সেই গর্ত।

স্থানীয়রা জানান, গত বছর এক ব্যক্তি এখানে গভীর নলকূপ বসানোর চেষ্টা করেছিলেন। ১২০ ফুট নিচেও পানি না পাওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পাইপটি খোলা অবস্থায় ফেলে রাখা হয়। বৃষ্টির কারণে গর্তটি আরও বড় হয়ে পড়ে। কোনো সতর্কতা চিহ্ন বা ঢাকনা না থাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

উদ্ধার অভিযান

দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে জড়ো হন হাজারো মানুষ। গর্তের পাশে রাতভর দাঁড়িয়ে ছিলেন সাজিদের মা। সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আশায় চলছিল কান্না, প্রার্থনা আর অপেক্ষা। প্রথম দিকে গর্তের ভেতর থেকে শিশুটির ক্ষীণ শব্দ পাওয়া গেলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই সাড়া থেমে যায়। এতে উদ্ধারকর্মীদের উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়।

ফায়ার সার্ভিস গর্তে অক্সিজেন সরবরাহ অব্যাহত রাখে। পাশাপাশি মেডিকেল টিম এবং স্থানীয় প্রশাসন পুরো সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল।

বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম, তবুও অভিযান চলেছে

এর আগে সন্ধ্যায় লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছিলেন যে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে জীবিত বা মৃত, যে অবস্থায়ই হোক, সাজিদকে উদ্ধার না করা পর্যন্ত অভিযান বন্ধ করা হবে না।

অবশেষে ৩২ ঘণ্টার নিরলস চেষ্টার পর শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করছেন এবং সবাই অপেক্ষা করছেন ছোট্ট সাজিদের অবস্থা জানার জন্য।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ