ডলার বাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সক্রিয় ভূমিকা, পাঁচ মাসে কেনা আড়াই বিলিয়ন ডলার

ডলার বাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সক্রিয় ভূমিকা, পাঁচ মাসে কেনা আড়াই বিলিয়ন ডলার
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ধারাবাহিকভাবে হস্তক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ১৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে মোট ২০২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, মাল্টিপল প্রাইস অকশন (এমপিএ) পদ্ধতিতে এই ডলার কেনা হয়েছে। এতে প্রতি ডলারের দর নির্ধারিত হয় ১২২ টাকা ২৭ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ২৯ পয়সার মধ্যে। সবমিলিয়ে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার সংগ্রহের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫১৪ মিলিয়ন ডলার, যা প্রায় আড়াই বিলিয়ন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তুলনামূলকভাবে চাহিদা কমে আসায় দামের ওপর নিম্নমুখী চাপ তৈরি হয়েছে। এতে ডলারের মূল্য অতিমাত্রায় কমে গেলে রপ্তানিকারক ও প্রবাসী আয় প্রেরণকারীরা নিরুৎসাহিত হতে পারেন। এ কারণেই একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে দাম ধরে রাখতে বাজারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এটি কোনো কৃত্রিম মূল্যনিয়ন্ত্রণ নয়; বরং যেসব ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত ডলার রয়েছে, সেসব ব্যাংক থেকেই নিলামের মাধ্যমে ডলার কেনা হচ্ছে। একই সঙ্গে রপ্তানি আয় ও প্রবাসী আয়-দুই ক্ষেত্রেই সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে, যা বাজারে ডলারের জোগান বাড়িয়েছে।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণচুক্তির শর্ত অনুযায়ী গত মে মাসে বাজারভিত্তিক বিনিময় হার ব্যবস্থা চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে ব্যাংকগুলো এখন চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে ডলারের দর নির্ধারণ করছে। তবে রমজান সামনে রেখে পণ্য আমদানি বেড়ে যাওয়া, এলসি খোলার প্রবণতা বৃদ্ধি এবং আমদানি বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের চাহিদা আবার বাড়তে শুরু করেছে।
ব্যবসায়ীদের মতে, রমজানের আগে আমদানির চাপ স্বাভাবিক হলেও একই সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার কেনার ফলে বাজারে দামের ওপর ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি হতে পারে। এতে আমদানির খরচ বাড়ার পাশাপাশি ব্যবসায়িক ব্যয়ও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত নভেম্বর মাসে বিভিন্ন পণ্যের আমদানি এলসি খোলা হয়েছে ৫৫৬ কোটি ৬৬ লাখ ডলারের, আর একই সময়ে নিষ্পত্তি হয়েছে ৪৮৬ কোটি ৯৯ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) মোট এলসি খোলা হয়েছে ২ হাজার ৯৪১ কোটি ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। তবে একই সময়ে এলসি নিষ্পত্তির পরিমাণ কমেছে প্রায় ২ দশমিক ৬ শতাংশ।
 

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ