ইউক্রেন যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আসন্ন নিষেধাজ্ঞার কারণে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক চাপের মুখে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত ২০ নভেম্বর থেকে জামনগরের এসইজেড শোধনাগারে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি বন্ধ করা হয়েছে বলে রিলায়েন্সের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে।

আগামী ২১ জানুয়ারি, ২০২৬ থেকে কার্যকর হতে চলা ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্য আমদানির বিধিনিষেধের আগেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে কোম্পানিটি।

রিলায়েন্সের একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন, আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে এসইজেড রিফাইনারি থেকে যে পণ্যগুলো রপ্তানি করা হবে, সেগুলো রাশিয়া থেকে আনা হয়নি এমন অপরিশোধিত তেল থেকে তৈরি করা হবে। মূলত রপ্তানিমুখী এই শোধনাগার আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য তড়িঘড়ি এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

এই সিদ্ধান্তের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত চাপ একটি প্রধান কারণ হিসেবে কাজ করেছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মার্কিন প্রশাসন বারবার ভারতের ওপর রাশিয়ার তেল কেনার বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নতুন সিনেট আইনকে সমর্থন করার কথা জানিয়েছেন, যা ওয়াশিংটনকে মস্কোর সঙ্গে ব্যবসা করা দেশগুলোর ওপর ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক চাপানোর ক্ষমতা দেবে।

রিলায়েন্সের এই বিবৃতি এমন এক সময়ে এলো, যখন রাশিয়ার বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী সংস্থা রোসনেফ্ট এবং লুকঅয়েলের সঙ্গে লেনদেনের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ২১ নভেম্বর শেষ হওয়ার কথা ছিল।
রিলায়েন্স এর সঙ্গে প্রতিদিন রোসনেফ্টের ০.৫ মিলিয়ন ব্যারেল তেলের চুক্তি ছিলো।

মার্কিন ট্রেজারি সচিব স্কট বেসেন্ট এর আগে একটি বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে রোসনেফট এবং লুকঅয়েলের মতো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত রুশ তেল সংস্থাগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, রিলায়েন্স গুজরাটের জামনগরে দুটি শোধনাগার পরিচালনা করে—যার মধ্যে ডমেস্টিক ট্যারিফ এরিয়া ইউনিট ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে পরিষেবা দেয় এবং এসইজেড ইউনিটটি মূলত রিলায়েন্স পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের অধীনে থেকে প্রধানত রপ্তানির কাজ করে।
রিলায়েন্সের এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনা চলার সময়ে একটি কৌশলগত পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।