স্টুডেন্ট বার্নআউট: পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপের মানসিক প্রভাব

স্টুডেন্ট বার্নআউট: পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপের মানসিক প্রভাব
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

দ্রুতগতির শিক্ষাব্যবস্থা, প্রতিযোগিতার চাপ এবং নিরন্তর পারফর্ম করার দৌড়, এসবের মাঝেই অগণিত শিক্ষার্থী অজান্তেই ঢুকে যাচ্ছে স্টুডেন্ট বার্নআউটের পথে। ক্লান্তি, উৎসাহহীনতা, আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া- এসব শুধু সাধারণ স্ট্রেস নয়; দীর্ঘমেয়াদে এটি মানসিক স্বাস্থ্যকে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

স্টুডেন্ট বার্নআউট কী?

স্টুডেন্ট বার্নআউট হলো পড়াশোনার প্রতি অতিরিক্ত মানসিক, শারীরিক ও আবেগজনিত ক্লান্তি। এটা সাধারণ স্ট্রেস থেকে আলাদা, কারণ বার্নআউট স্থায়ী হয় এবং শিক্ষার্থীর শেখার ক্ষমতা ও আচরণ দুইই বদলে দিতে পারে।
 

পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপ কেন তৈরি হয়?

◑ অতিরিক্ত হোমওয়ার্ক ও অ্যাসাইনমেন্টের চাপ

◑ পড়ার সময়ের তুলনায় বিশ্রামের ঘাটতি

◑ ফলাফলের প্রতি পরিবার বা সমাজের উচ্চ প্রত্যাশা

◑ পরীক্ষায় ভালো না করলে 'ব্যর্থ' হওয়ার ভয়

◑ নিজেকে সবসময় অন্যদের সঙ্গে তুলনা করা

◑ অতিরিক্ত কোচিং, স্কুল ও ক্লাসের সময়সূচির চাপ

 

যে লক্ষণগুলো বার্নআউটের ইঙ্গিত দেয়:

⇨ পড়ার টেবিলে বসতে ভয় বা অনীহা

⇨ ক্লাস বা পড়াশোনায় আগ্রহ কমে যাওয়া

⇨ ঘুমে ব্যাঘাত বা অতিরিক্ত ঘুম

⇨ মাথাব্যথা, ক্লান্তি, বিরক্তি বা মনোযোগের সমস্যা

⇨ সামান্য ভুলেই ভীষণ হতাশা

⇨ সামাজিকতা কমে যাওয়া, নিজেকে গুটিয়ে রাখা

 

মানসিক প্রভাব কতটা গভীর?

স্টুডেন্ট বার্নআউট সময়মতো শনাক্ত না হলে:

⇨ অবসাদ ও উদ্বেগ বেড়ে যায়

⇨ আত্মবিশ্বাস কমে যায়

⇨ পড়াশোনার অগ্রগতি থেমে যায়

⇨ লক্ষ্য হারানোর প্রবণতা তৈরি হয়

⇨ নেতিবাচক চিন্তা বৃদ্ধি পায়

 

সমাধান কী?

☞ ব্যালান্সড রুটিন তৈরি করা। পড়ার সময়ের পাশাপাশি বিশ্রাম, ঘুম, খাবার ও বিনোদনকে গুরুত্ব দিন।

☞ বাস্তবসম্মত লক্ষ্য ঠিক করা। একদিনেই অনেক কিছু শেষ করার চাপ কমান।

☞ পড়ার মাঝে ছোট বিরতি। মস্তিষ্ককে ফোকাস ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।

☞ শারীরিক ব্যায়াম ও মেডিটেশন,যা চাপ কমায় ও মনোযোগ বাড়ায়।

☞ অভিভাবক ও শিক্ষকদের উচিত চাপ না দিয়ে উৎসাহ দেওয়া জরুরি।

☞ লক্ষণ গুরুতর হলে কাউন্সেলরের কাছে যেতে দ্বিধা নয়।
 

স্টুডেন্ট বার্নআউট যে শুধুই স্ট্রেস তা কিন্তু  নয়; এটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ শেখার ক্ষমতা, আত্মবিশ্বাস ও মানসিক শান্তিকে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া এবং পড়াশোনাকে ব্যালান্সড ও মানবিকভাবে এগিয়ে নেওয়াই আজকের দিনের প্রয়োজন। একজন সুস্থ, সচেতন শিক্ষার্থীই পারে ভবিষ্যৎকে অধিক উজ্জ্বল ও স্থিতিশীল করে তুলতে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ