মঙ্গল থেকে আসছে পৃথিবীর প্রথম 'রেড রক';নতুন রূপে জেগে উঠল Mars Sample Return অভিযান!
- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
মানবতার জন্য এক হাজার বছরের অপেক্ষার ফল হতে চলেছে! পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা এখনো অপেক্ষায় আছেন সেই মুহূর্তের জন্য, যখন প্রথমবারের মতো একটি রকেট পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনবে মঙ্গলগ্রহের রক ও মাটির নমুনা। NASA এবং European Space Agency যৌথভাবে চালু করা "Mars Sample Return" (MSR) অভিযানে এখন বড় পরিবর্তন চোখে পড়ছে- বাজেট কমাবে, অপশন বাড়ছে, তার সঙ্গে সময়সীমা নিয়ে পুনর্বিবেচনা চলছে।
MSR অভিযানের উদ্দেশ্য হল Perseverance Rover এখনো মঙ্গলগ্রহের Jezero Crater এলাকায় সংগ্রহ করে রাখছে রক ও মাটি-নমুনাগুলো পৃথিবীতে আনা। এটি শুধু একটি রকেট মিশন নয়; দক্ষিণ প্রযুক্তি, বহু ধাপীয় লজিস্টিক ও নতুন স্থাপনা নির্ভর আয়োজন।
NASA এখন দুইটি ভিন্ন ল্যান্ডিং আর্কটেকচার (Landing Architecture) পরীক্ষা করছে-
একটি হলো পূর্বে প্রমাণিত "স্কাই ক্রেইন" পদ্ধতি, অন্যটি হলো বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে নতুন ল্যান্ডার ব্যবহারের সম্ভাবনা।মিশনের নতুন রূপরেখা অনুযায়ী, খরচ কমিয়ে আনতে হবে। প্রথম পরিকল্পনায় ছিল প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলারের বাজেট, কিন্তু এখন আপডেট অনুযায়ী খরচ ৬–৮ বিলিয়ন ডলারে নামতে পারে।সময়সূচিতেও পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে- প্রথমে ফিরে আনার সময় ছিল ২০৪০ সালের দিকে, তবে নতুন পরিকল্পনায় চেষ্টা চলছে ২০৩০-এর দশকে নমুনা ফিরিয়ে আনার।
একটি স্বাধীন রিভিউ বোর্ড (Independent Review Board) ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রিপোর্ট দিয়েছে, যেখানে মিশনের জটিলতা, বাজেট ও সময়সীমা নিয়ে সতর্কতা ছিল। NASA সেই রিপোর্টের পর যথাযথ কর্মপন্থা গ্রহণ করেছে।
এই নমুনাগুলো বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যাবে - মঙ্গলগ্রহের অতীত জীবাণুর সম্ভাবনা, জলবাহী ইতিহাস, গ্রহটির পরিবেশগত পরিবর্তন। এটি পৃথিবীর বাইরের জীবনের খোঁজে এক বড় ধাপ।
আরও বড় ব্যাপার হলো-এই মিশনের প্রকৃতি এমন যে, ভবিষ্যতে মানুষকে মঙ্গলগ্রহে পাঠানোর পথে একটি প্রযুক্তিগত ও কার্যক্রম-রূপরেখা তৈরি করবে। সেন্সর, নমুনা লিফট-অফ, পৃথিবীতে নিরাপদ রিটার্ন সবই ভবিষ্যতের মানবমিশনের দিকনির্দেশক।
চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকি-
প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, মঙ্গলে থেকে রকেট উৎক্ষেপণ করা আজো অন্বেষণমূলক প্রযুক্তি। কারন, কোনো গ্রহ থেকে উত্তোলিত রকেট পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা আগে হয়নি।
বাজেট ও সময়সীমা বড় নিয়ন্ত্রক। যদি খরচ এত বেশি হয় বা কাজ ধরা পড়ে যায়, তাহলে মিশনের গতি বা পরিকল্পনায় বড় পরিবর্তন আসতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ও সহযোগিতার বিষয় গুরুত্বপূর্ণ- বাড়তে পারে প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্ব, কিন্তু ঠিক থাকবে কি না তা সময় দেখাবে।
"মঙ্গল থেকে নমুনা ফিরিয়ে আনা" শুধু একটি ব্রহ্মাণ্ড অভিযান নয়, মানবতার সর্বশ্রেষ্ঠ কৌতূহল- আমরা কি একা? এটা এক দৃষ্টিতে প্রযুক্তির পরীক্ষা, অন্য দৃষ্টিতে বিজ্ঞান এবং মানবচেতনার জাগরণ। যদিও এখনও বহু বাধা রয়েছে- খরচ, সময়সীমা, প্রযুক্তিগত ঝুঁকি। তবুও NASA-এর নতুন রূপায়িত পরিকল্পনা আশা জাগায়। এই মিশন সফল হলে আগামি প্রজন্ম জানতে পারবে মঙ্গলগ্রহের ইতিহাস, বাড়িয়ে দেবে পৃথিবীর বাইরের জীবনের সন্ধান, এবং তৈরি করবে মানুষ পাঠানোর মহাপ্ল্যাটফর্ম। science fiction থেকে গিয়ে বাস্তব হয়ে উঠছে এই যাত্রা।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।