গত ১৩ নভেম্বর বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে পাঁচটি গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। প্রসিকিউশন পক্ষ এই দুই আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চেয়ে ট্রাইব্যুনালে শুনানি করেছে। অন্যদিকে, আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী তাদের নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়েছেন।

মামলার একপর্যায়ে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হওয়ায় তার আইনজীবীও তার খালাস চেয়েছেন।


প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস. এইচ. তামিম শুনানিতে অংশ নেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন এবং রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ শুনানি করেন।


ঐতিহাসিক এই মামলায় গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের পিতাসহ শহীদ পরিবারের অনেকে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এছাড়া স্টার উইটনেস হিসেবে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান সাক্ষ্য দেন। সর্বমোট ৫৪ জন সাক্ষী এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, এই মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে।
বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই সকল অভিযোগের বিচার চলছে।