গ্লোবাল ফাইন্যান্সের মূল্যায়নে ‘সি’ গ্রেড পেলেন গভর্নর এইচ মনসুর
- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
আন্তর্জাতিক আর্থিক সাময়িকী গ্লোবাল ফাইন্যান্সের প্রকাশিত ‘সেন্ট্রাল ব্যাংকার রিপোর্ট কার্ড ২০২৫’ অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ‘সি’ গ্রেড অর্জন করেছেন। এই মূল্যায়ন অনুযায়ী, তাঁর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সামগ্রিক পারফরম্যান্সকে সংস্থাটি ‘মিশ্র’ বা গড়পড়তা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, মুদ্রার স্থিতিশীলতা এবং নীতিগত বিশ্বাসযোগ্যতা- এই চারটি মূল সূচকের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানদের মূল্যায়ন করা হয়।
গ্লোবাল ফাইন্যান্স জানায়, আহসান এইচ মনসুরের ক্ষেত্রে এসব সূচকে বাংলাদেশ ব্যাংক গড় ফল করেছে।
তুলনামূলকভাবে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কার গভর্নর নন্দলাল উইরাসিংহে পেয়েছেন ‘এ’ গ্রেড, আর ভিয়েতনামের গভর্নর নুয়েন থি হং সর্বোচ্চ ‘এ প্লাস’ গ্রেড লাভ করেছেন।
উল্লেখ্য, মনসুরের পূর্বসূরি, বাংলাদেশের সাবেক গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার ২০২৩ সালের মূল্যায়নে ‘ডি’ গ্রেড পেয়েছিলেন। সেই তুলনায় মনসুরের অধীনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থানে কিছুটা উন্নতি হলেও এটি এখনও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি বলে সংস্থাটি মন্তব্য করে।
আহসান এইচ মনসুর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর গভর্নর হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সেসময় দেশের অর্থনীতি উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট, ব্যাংক খাতের ব্যাপক অনিয়ম এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাবে টালমাটাল ছিল।
দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে রিপো রেট ৮.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করেন। যদিও এই পদক্ষেপে মূল্যস্ফীতির ওপর কিছুটা প্রভাব পড়ে, তবে এর ফলে প্রবৃদ্ধি কমে আসে। ২০২৫ অর্থবছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৩.৯ শতাংশে নেমে আসে, যা গত এক দশকের গড় প্রবৃদ্ধির (৬ শতাংশ) তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
বর্তমানে আহসান এইচ মনসুরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সহায়তায় একটি তিন বছর মেয়াদি ব্যাংক খাত সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এই কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে খেলাপি ঋণ কমানো, দেউলিয়া আইন হালনাগাদ করা এবং ব্যাংক পরিচালনায় জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করা। তবে গ্লোবাল ফাইন্যান্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের গতি এখনও ধীর।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মনসুরের নীতি দিকনির্দেশনা যুক্তিসংগত হওয়া সত্ত্বেও বাস্তবায়নে গতি কম থাকায় এবং ব্যাংক খাতের অনিয়ম, ডলারের বাজার অস্থিরতা ও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসায় জনগণের আস্থা এখনো সম্পূর্ণরূপে ফিরে আসেনি।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।