বিদেশে বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ বাড়ছে, অর্থনীতিবিদদের উদ্বেগ
- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের বিদেশে বিনিয়োগ করা বৈধ পুঁজির স্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়ে ৩৫ কোটি ১৪ লাখ ইউএস ডলারে পৌঁছেছে যা দেশীয় মুদ্রায় ৪২৮৭ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে এই স্থিতির পরিমাণ ছিল ৩৩ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। এক বছরের ব্যবধানে বিদেশে বিনিয়োগের স্থিতি বৃদ্ধি পেয়েছে ১ কোটি ৪১ লাখ ডলার বা ৪.১৯%।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত অর্থবছরে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো মোট ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার নতুন পুঁজি বিনিয়োগ করেছে।
যার মধ্যে দেশ থেকে নগদ পুঁজি ১ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। পূর্বের অর্জিত মুনাফার পুনঃবিনিয়োগ ৩ কোটি ২০ লাখ ডলার এবং আগের নেওয়া ঋণ পরিশোধ ১ কোটি ৩৪ লাখ ডলার।
পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আগের অর্থবছরের তুলনায় গত অর্থবছর মুনাফা পুনঃবিনিয়োগের প্রবণতা ১৬৭.৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে দেশ থেকে নিট পুঁজি নেওয়ার পরিমাণ ১৭.১০% হ্রাস পেয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশের কোম্পানিগুলো বিশ্বের ১৮টিরও বেশি দেশে বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
গত অর্থবছরে দেশ থেকে নেওয়া পুঁজির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হয়েছে ভারতে, যার পরিমাণ ২ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার এবং সিঙ্গাপুরে ২১ লাখ ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্থাপনে সবচেয়ে বেশি পুঁজি নেওয়া হয়েছে-৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং এই খাত থেকেই সর্বাধিক মুনাফা-৩ কোটি ৪৩ লাখ ডলার দেশে ফেরত এসেছে।
এছাড়া খনিজ খাত এবং ওষুধ ও রসায়ন শিল্পেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পুঁজি বিনিয়োগ হয়েছে।
এ পর্যন্ত বিদেশে নেওয়া মোট পুঁজির স্থিতির মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে যুক্তরাজ্যে-১০ কোটি ৭৫ লাখ ডলার, ভারতে-১০ কোটি ৫৪ লাখ ডলার এবং হংকংয়ে-৬ কোটি ৮৭ লাখ ডলার।
উল্লেখ্য, বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ১৯৪৭ সালের আইন সংশোধন করে একটি শর্তসাপেক্ষ বিধান যুক্ত করে, যেখানে মূলত রপ্তানিকারক বা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী কোম্পানিগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ পায়।
দেশ থেকে পুঁজি বিদেশে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে উদ্বেগ লক্ষ্য করা গেছে।
তাদের মতে, দেশে যখন বেকারত্বের হার বাড়ছে এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিম্নমুখী, তখন এই পুঁজি বিদেশে বিনিয়োগ না করে দেশের অভ্যন্তরে ব্যবহার করা হলে অর্থনীতি বেশি লাভবান হতো। এতে দেশের জিডিপি বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বেকারত্ব কমাতে সহায়ক হতো।
এ কারণে অর্থনীতিবিদরা দেশ থেকে বিদেশে পুঁজি বিনিয়োগ করার সুযোগটি পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব করেছেন।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।