সুদানের সংঘাতে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েল গভীরভাবে জড়িত: বিশ্লেষক

সুদানের সংঘাতে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েল গভীরভাবে জড়িত: বিশ্লেষক
ছবির ক্যাপশান, সুদানের সংঘাতে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েল গভীরভাবে জড়িত: বিশ্লেষক
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

সুদানের চলমান গৃহযুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাত(ইউএই)ও ইসরায়েলের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলেছেন দেশটির বিশ্লেষক নাসের ইব্রাহিম। ইরানের মেহের নিউজ এজেন্সিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সুদানের এই সংঘাতের মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে দেশের বিপুল সোনার খনি,কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান এবং‘আরবীকরণ’এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা।

ইব্রাহিমের মতে,ইউএই-র অর্থ ও অস্ত্র সহায়তায় পরিচালিত র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস(আরএসএফ)বর্তমানে জাতিগত নির্মূল ও ব্যাপক গণহত্যায় লিপ্ত। তিনি জানান,উত্তর দারফুর প্রদেশের আল-ফাশির শহরে মাত্র তিন দিনের অভিযানে ১,৫০০-রও বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের একটি জঘন্য উদাহরণ। এই সহিংসতার পেছনে ইসরায়েল,লিবিয়ার জেনারেল হাফতারের বাহিনী ও চাদের কিছু শক্তিও ভূমিকা রাখছে বলে দাবি করেন তিনি।

বিশ্লেষক আরও বলেন,২০১৯ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের পতনের পর থেকে সুদান একের পর এক রাজনৈতিক সংকটে জর্জরিত। ২০২৩ সালের এপ্রিলে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে রূপ নেয়,যার ফলে হাজারো প্রাণহানি ও লাখ লাখ মানুষের বাস্তুচ্যুতি ঘটে। ইব্রাহিমের দাবি,সেনাবাহিনীর ওপর চাপিয়ে দেওয়া  “কাঠামো চুক্তি” প্রত্যাখ্যান করার পর ইউএই আরএসএফকে ক্ষমতায় বসানোর ষড়যন্ত্র শুরু করে যা শেষ পর্যন্ত গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায়।

তার বিশ্লেষণে,ইউএই ও ইসরায়েলের সম্পৃক্ততা কেবল রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের জন্য নয়,বরং আফ্রিকার সবচেয়ে ধনী সোনার মজুদের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবেও দেখা উচিত। তিনি বলেন,ইউএই পশ্চিমা স্বার্থে ইসলামি আন্দোলন দমন এবং সুদানের সমাজ কাঠামোকে আরবিক রূপ দিতে চায়। এই প্রভাব কেবল সুদানেই সীমাবদ্ধ নয় লিবিয়া, ইয়েমেন,ইরাক ও লেবাননের মতো দেশগুলোতেও একই কৌশল অনুসরণ করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ইব্রাহিম বলেন,“সুদান ছাড়া সুদানের আর কোনো বন্ধু নেই।” তিনি অভিযোগ করেন,পশ্চিমা বিশ্ব সংঘাতের মানবিক বিপর্যয় উপেক্ষা করছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেবল নিন্দা ও সংবাদ কাভারেজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তবে কিছু নাগরিক সংগঠন ও মানবাধিকার গোষ্ঠী ইতোমধ্যে ইউএইর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার দাবি তুলেছে। তার মতে,দীর্ঘমেয়াদে এই ভূমিকার কারণে ইউএই নিজেই একটি ‘অবাঞ্ছিত শক্তি’ হিসেবে চিহ্নিত হবে,যা আরব বিশ্বের ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ