বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং নতুন বাজারগুলোতে রপ্তানি বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে ১ হাজার ৯৮৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩.২৮ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরে এই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ৭৫৬ কোটি ডলারের পোশাক।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে মোট রপ্তানির অর্ধেকের বেশি পোশাকের গন্তব্য ছিল ইইউ। এই বাজারে রপ্তানি হয়েছে ৯৮৭ কোটি ডলারের পোশাক, যা গত বছরের তুলনায় ১৫.২২ শতাংশ বেশি। ইইউভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স, পোল্যান্ড, ইতালি ও ডেনমার্কে ৫০ কোটি ডলার বা তার বেশি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে পোল্যান্ডে রপ্তানি বেড়েছে সর্বোচ্চ ২৮ শতাংশ, অন্যদিকে স্পেনে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৩ শতাংশের কাছাকাছি।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পোশাকের চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ৩৮৪ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৭.৫৫ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় ১৯-২০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রে যায়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপের কারণে বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানিকারকরা নতুন সুযোগের আশা করছেন।
যুক্তরাজ্য ও কানাডাতেও রপ্তানি বেড়েছে। যুক্তরাজ্যে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে রপ্তানি হয়েছে ২১৬ কোটি ডলারের পোশাক, যা গত বছরের তুলনায় ৬.৭০ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে কানাডায় রপ্তানি হয়েছে ৬৪ কোটি ডলারের পোশাক, যেখানে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ শতাংশ।
নতুন বাজারেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে নতুন বাজারে ৩৩৭ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৭.৫ শতাংশ বেশি। নতুন বাজারের মধ্যে জাপানে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে (৬০ কোটি ডলার), এরপরই রয়েছে অস্ট্রেলিয়া (৪৩ কোটি ডলার), ভারত (৩৭ কোটি ডলার), দক্ষিণ কোরিয়া (২৩ কোটি ডলার) এবং তুরস্ক (২২ কোটি ডলার)।
তবে রপ্তানির এই ইতিবাচক ধারা বজায় রাখতে অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার তাগিদ দিয়েছেন শিল্প সংশ্লিষ্টরা। নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, "বিদেশি ক্রেতারা কম দামে পোশাক কিনতে চাইছে, যা উৎপাদন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এ ছাড়া গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট, ব্যাংকিং সমস্যা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে রপ্তানির এই ধারা বজায় রাখা কঠিন হবে।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন, গ্যাস সংকটের কারণে অনেক বস্ত্রকল পুরোদমে উৎপাদন করতে পারছে না, ফলে স্থানীয় বস্ত্রকল দুর্বল হয়ে পড়ছে। এসব সমস্যা দ্রুত সমাধান না করলে রপ্তানির এই ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।