প্রস্রাবে অস্বাভাবিক ফেনা কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণ

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
প্রস্রাবে অস্বাভাবিক ফেনা দেখা দিলে সেটি শরীরের অভ্যন্তরে কিডনি সমস্যার একটি প্রাথমিক সতর্ক সংকেত হতে পারে, এমনটি জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনি সুস্থ থাকলে রক্তের প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো, বিশেষ করে প্রোটিন, শরীরে ধরে রাখে এবং কেবল বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়। কিন্তু কিডনির ফিল্টার বা গ্লোমেরুলাস ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রোটিন রক্তে না থেকে প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে আসে, যা প্রোটিনুরিয়া (Proteinuria) নামে পরিচিত। এই প্রোটিন লিকের কারণেই প্রস্রাবে স্থায়ী ফেনা তৈরি হয়।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা জানান, সব ধরনের ফেনা মানেই রোগ নয়। অনেক সময় পানির চাপ, ডিহাইড্রেশন বা প্রস্রাবের গতি বেড়ে গেলেও অস্থায়ীভাবে ফেনা দেখা দিতে পারে। তবে কয়েকদিন বা সপ্তাহজুড়ে স্থায়ী ফেনা থাকলে তা কিডনি ক্ষতির ইঙ্গিত হতে পারে। আমেরিকান জার্নাল অব কিডনি ডিজিজেস (AJKD, 2021)–এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “প্রস্রাবে স্থায়ী ফেনা প্রোটিনুরিয়া ও ক্রনিক কিডনি ডিজিজের প্রাথমিক নির্দেশক হতে পারে, এমনকি রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বাড়ার আগেই।”
বিশেষজ্ঞরা বলেন, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, নেফ্রাইটিস বা কিডনির প্রদাহ, অতিরিক্ত প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং দীর্ঘমেয়াদি কিডনি স্ট্রেস, এসব কারণেই প্রোটিনুরিয়া দেখা দিতে পারে। তাই এই লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
প্রাথমিকভাবে Urine Routine Examination (R/E) ও Urine Protein Test করার পরামর্শ দিয়েছেন নেফ্রোলজিস্টরা। পাশাপাশি Serum Creatinine ও eGFR পরীক্ষার মাধ্যমে কিডনির কার্যক্ষমতা মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। চিকিৎসকরা আরও জানান, ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, পর্যাপ্ত পানি পান করা, অতিরিক্ত লবণ ও প্রোটিন এড়িয়ে চলা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা কিডনি রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রস্রাবে ফেনা দেখা দেওয়া কোনো তুচ্ছ বিষয় নয়, এটি কিডনির নীরব বিপদের ইঙ্গিত। সময়মতো চিকিৎসা ও সচেতনতা এই জটিল রোগ থেকে মুক্ত থাকতে সহায়তা করতে পারে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।