জনগণের কষ্টে শাসকের দায়িত্ব

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
মিসরে হযরত উমর ইবনে খাত্তাব (রা.)-এর ন্যায়বোধ ও প্রশাসনিক জবাবদিহিতার শিক্ষা ইসলামী শাসনের অনন্য উদাহরণ। দুর্ভিক্ষে জনগণের কষ্টে শাসকের বিলাসকে তিনি অনৈতিক ঘোষণা করেন। ইসলামী প্রশাসন, ন্যায়পরায়ণতা, শাসকের দায়িত্ব ও মানবিক নীতিতে হযরত উমরের দৃষ্টান্ত আজও অনুপ্রেরণাদায়ক।
মিসর থেকে প্রাপ্ত ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়, ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) একবার মিসরের গভর্নরকে ডেকে পাঠান প্রশাসনিক জবাবদিহিতা ও শাসন ব্যবস্থার নৈতিকতা নিয়ে আলোচনা করতে। সাক্ষাৎকালে খাবার পরিবেশনের সময় হযরত উমর (রা.) সাধারণ রুটি ও জয়তুন তেল দিয়ে আহার শুরু করেন। গভর্নর খানিকটা অপেক্ষা করে প্রশ্ন করেন, “আর কিছু নেই?”
তখন দেশজুড়ে চলছিল মারাত্মক দুর্ভিক্ষ। এ প্রেক্ষাপটে খলিফা গভর্নরকে জিজ্ঞেস করেন, “তুমি কি প্রতিদিন গোশত খাও?” গভর্নর উত্তর দেন, “জি, খাই।” সঙ্গে সঙ্গেই হযরত উমর প্রশ্ন করেন, “তোমার দেশের সাধারণ মানুষ কি এই দুর্ভিক্ষে গোশত খেতে পারে?” গভর্নর উত্তর দেন, “না।” তখন খলিফা উমর কঠোরভাবে বলেন, “যখন জনগণ অনাহারে থাকে, তখন শাসকের বিলাসিতা অন্যায়। তোমার মুখে গোশত ওঠা উচিত নয়, যতক্ষণ না তোমার জনগণও তা খেতে সক্ষম হয়।”
ইতিহাসবিদদের মতে, এই ঘটনাটি ইসলামী শাসনব্যবস্থার নৈতিক ভিত্তি ও জবাবদিহিতার এক অনন্য উদাহরণ। হযরত উমর (রা.) তাঁর শাসনামলে সর্বদা জনগণের কল্যাণকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, “যদি ফোরাত নদীর তীরে একটি কুকুরও অনাহারে মারা যায়, তার জবাবদিহি আমাকেই করতে হবে।”
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই ঐতিহাসিক শিক্ষা বর্তমান যুগের জনপ্রতিনিধিদের জন্যও প্রাসঙ্গিক। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থেকে জনগণের কষ্টে শাসকের বিলাসিতা শুধু নৈতিকভাবে ভুল নয়, বরং ইসলামী শাসনের নীতির পরিপন্থী। হযরত উমরের এই দৃষ্টান্ত আজও শাসন ও ন্যায়পরায়ণতার প্রতীক হিসেবে আলোচিত।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।