জবা ফুলের আড়াল রহস্য: পূজা-অনুষ্ঠানে কেন এটি ছাড়া সম্ভব নয়!

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
প্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশে ফুল শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, বরং বিশ্বাস, আচার-অনুষ্ঠান ও আধ্যাত্মিকতার অবিচ্ছেদ্য অংশ। অসংখ্য ফুলের ভিড়ে জবা ফুল বা হিবিসকাস বিশেষ মর্যাদা পেয়েছে হিন্দু পূজা-পার্বণে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে,কেন এই সাধারণ লাল জবা ফুল এতটা গুরুত্ব পায়?
জবা ফুলকে হিন্দু ধর্মে শক্তি ও শক্তিমত্তার প্রতীক ধরা হয়। বিশেষ করে কালী ও গণেশের পূজায় লাল জবা ফুল অপরিহার্য।
কালী পূজায়,লাল জবা রক্ত, শক্তি ও অগ্নির প্রতীক। বিশ্বাস করা হয়, দেবীর তেজ, উগ্রতা ও শক্তির প্রকাশ ঘটে এই ফুলে। তাই কালীপূজার অর্ঘ্যে জবা ছাড়া পূজা অসম্পূর্ণ ধরা হয়।
গণেশ পূজায়, জবা ফুল গণেশের প্রিয় ফুল। বিশ্বাস রয়েছে, জবা নিবেদন করলে বাধা দূর হয় ও সফলতা আসে।
জবা ফুল সাধারণত গাঢ় লাল রঙের হয়, যা দেবদেবীর কাছে "রক্ত ও জীবনীশক্তি"-র প্রতীক হিসেবে মান্য। লাল রঙ পবিত্রতা, শক্তি ও দেবত্বকে নির্দেশ করে। আচার-অনুষ্ঠানে এই প্রতীকী অর্থই ফুলটিকে আলাদা গুরুত্ব দিয়েছে।
শুধু ধর্মীয় আচারেই নয়, আয়ুর্বেদেও জবা ফুলের বিশেষ স্থান আছে। এর পাপড়ি শরীর ঠান্ডা রাখে, হজমে সাহায্য করে এবং চুল ও ত্বকের যত্নে ব্যবহার হয়। এ কারণে অনেকেই পূজার পর অবশিষ্ট ফুলকে ওষুধি কাজে ব্যবহার করেন।
পূজা-পার্বণে অপরিহার্যতার কারণ হলো দেবীর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত প্রতীকী তাৎপর্য। লাল রঙের আধ্যাত্মিক গুরুত্ব-শক্তি, বল ও জীবনীশক্তি।
গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র জবা ফুল সহজেই জন্মে, তাই পূজার জন্য সর্বদা পাওয়া যায়। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলে আসা বিশ্বাসের কারণে জবা ফুল পূজার অপরিহার্য উপাদান হয়ে উঠেছে।
জবা ফুল কেবল একটি সৌন্দর্যবর্ধক উদ্ভিদ নয়, বরং ধর্মীয় বিশ্বাস, আধ্যাত্মিকতা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। এর উজ্জ্বল লাল রঙ শক্তি ও ভক্তির বার্তা বহন করে, যা পূজা ও আচার-অনুষ্ঠানকে সম্পূর্ণতা দেয়। তাই যুগে যুগে যেমন ছিল, আজও এবং ভবিষ্যতেও জবা ফুল পূজার অন্যতম অপরিহার্য উপাদান হয়ে থাকবে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।