জাতীয় প্রতীক: পশু, পাখি, ফুল ও ফল কেন এবং কিভাবে বেছে নেওয়া হয়!

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
প্রতিটি দেশের কিছু অনন্য প্রতীক থাকে,যা দেশটির পরিচয়, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। বাংলাদেশেও রয়েছে জাতীয় পশু, পাখি, ফুল, ফল। সবকিছুই শুধু সুন্দর বা পরিচিত হওয়াই নয়, এগুলো দেশের মানুষের গর্ব, প্রাকৃতিক সম্পদ ও ঐতিহ্যের প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই প্রতীকগুলো কিভাবে নির্ধারিত হয়?
প্রথমেই মনে রাখতে হবে, কোনো প্রতীককে "জাতীয়" মর্যাদা দেওয়া মানে শুধু নাম দেওয়া নয়। এটি দেশের প্রকৃতি, ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং জনগণের সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়া উচিত। নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞান, সাংস্কৃতিক মূল্যায়ন এবং সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা, সবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথম ধাপ সাধারণত বৈজ্ঞানিক ও প্রকৃতিগত গুরুত্ব। জাতীয় পশু বা পাখি, ফুল বা ফল সাধারণত দেশের ভূমি বা জলবায়ুর সাথে স্বতঃসিদ্ধভাবে যুক্ত। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে বাঘকে জাতীয় পশু হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এটি শুধু দেশে জন্মানো এবং জীবনধারণে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায়ও ভূমিকা রাখে। একইভাবে শাপলা ফুল দেশের নদী, হাওর ও জলজ পরিবেশের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত।
দ্বিতীয় ধাপ হলো সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব। যে প্রতীকগুলো মানুষের মধ্যে সহজে গ্রহণযোগ্য, যা দেশে থাকা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে মিলিত, সেগুলো জাতীয় মর্যাদা পায়। রাজহংস পাখির সৌন্দর্য, শান্তি ও প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্ক এই কারণে জাতীয় পাখি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। আম, দেশের মানুষকে পরিচিত এবং পুষ্টিকর হওয়ায় জাতীয় ফলের মর্যাদা পায়।
নির্বাচনের সময় সরকারি প্রস্তাবনা ও অনুমোদনও গুরুত্বপূর্ণ। সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা মন্ত্রণালয় প্রার্থী তালিকা প্রণয়ন করে। এরপর বৈজ্ঞানিক তথ্য যাচাই, সাংস্কৃতিক প্রাসঙ্গিকতা এবং জনগণের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়া, জাতীয় প্রতীক হিসেবে বেছে নেওয়া জীব বা উদ্ভিদকে সহজে জনসাধারণ চেনা এবং ভালোবাসা প্রয়োজন। শুধু সুন্দর বা বিরল হওয়াই যথেষ্ট নয়; এগুলোতে দেশীয় পরিচয়, প্রাকৃতিক সংরক্ষণ এবং শিক্ষামূলক গুরুত্ব থাকতে হয়।
জাতীয় পশু, পাখি, ফুল ও ফল কেবল সৌন্দর্যের প্রতীক নয়। এগুলো দেশের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক প্রতিফলন। বৈজ্ঞানিক গবেষণা, সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা, সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক মূল্যায়নের মাধ্যমে নির্বাচিত এই প্রতীকগুলো দেশের মানুষকে গর্ব ও সচেতনতার অনুভূতি দেয়, এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।