দৈনন্দিন এই কাজগুলো বাদ দিচ্ছেন? অজান্তেই তৈরি হচ্ছে মারাত্মক বিপর্যয়!

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
আমরা সাধারণত দৈনন্দিন জীবনকে স্বাভাবিকভাবে চালাই-ঘুম, খাওয়া, গোসল ইত্যাদি মৌলিক অভ্যাসগুলো নিয়মিতভাবে মানার মাধ্যমে। তবে আধুনিক জীবনধারার চাপ, প্রযুক্তির আধিপত্য এবং ব্যস্ত সময়সূচি এই অভ্যাসগুলোর ব্যাহত করে দেয়। সম্প্রতিক গবেষণা প্রমাণ করেছে যে, এই মৌলিক অভ্যাসগুলো পরিপূর্ণ না থাকলে শুধু শারীরিক নয়, মানসিক ও আচরণগত বিপর্যয়ও দেখা দিতে পারে।
১. গোসল এবং ব্যক্তিগত যত্ন-
⇨ হাইজিন ও মস্তিষ্কের সংযোগ: নিয়মিত গোসল কেবল ত্বক পরিষ্কার রাখে না, এটি মস্তিষ্কের সেরোটোনিন নিঃসরণ বাড়ায়, যা মনকে সতেজ ও ইতিবাচক রাখে।
⇨ অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের প্রভাব: গোসল না করলে ত্বকের সংক্রমণ, অস্বস্তি এবং শরীরের দুর্গন্ধ বৃদ্ধির পাশাপাশি অসুস্থ মনোভাব বা হতাশা দেখা দিতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, হাইজিন রুটিন না মানলে স্ট্রেস হরমোন কোর্টিসল বৃদ্ধি পায়, যা আচরণে চঞ্চলতা বা রেগে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ায়।
২. ঘুমের গুরুত্ব-
⇨ মস্তিষ্কের পুনরুদ্ধার: ঘুম হচ্ছে মস্তিষ্কের "রিবুট" সময়। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে স্মৃতি, মনোযোগ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কমে যায়।
⇨ আচরণগত প্রভাব: দীর্ঘমেয়াদি ঘুমের অভাব দুঃখ, চঞ্চলতা, ক্রোধ বা হতাশা তৈরি করতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে অসংলগ্ন আচরণ বা অবসাদও দেখা দেয়।
ঘুমের সময় মস্তিষ্কে গ্লিমফ্যাট সিস্টেম সক্রিয় হয়, যা বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করে। ঘুম না হলে এই অপসারণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়, ফলে মস্তিষ্ক ক্লান্ত ও অশান্ত থাকে।
৩. খাদ্যাভ্যাস এবং মনোযোগ-
⇨ শরীরের শক্তি ও মানসিক স্থিতি: নিয়মিত, সুষম খাদ্য মস্তিষ্কে গ্লুকোজ সরবরাহ করে। এটি মনোযোগ ও আচরণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
⇨ অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: খাবার এড়িয়ে চলা, অনিয়মিত খাওয়া বা অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড গ্রহণ করলে চঞ্চলতা, মনঃকষ্ট, এবং হতাশা দেখা দিতে পারে।
মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার যেমন সারোটোনিন ও ডোপামিনের সঠিক উৎপাদন খাদ্যাভ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। সঠিক পুষ্টি না পেলে আচরণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
৪. সাধারণ অভ্যাসের অভাব এবং আচরণগত বিপর্যয়-
গবেষণায় দেখা গেছে, গোসল, ঘুম এবং খাদ্যাভ্যাসের অনিয়মের কারণে মানুষতে নিম্নলিখিত আচরণগত সমস্যা দেখা দিতে পারে:
⇨ চঞ্চলতা বা ধৈর্যের অভাব
⇨ মনোযোগে ঘাটতি ও কাজের দক্ষতা হ্রাস
⇨ মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা হতাশা বৃদ্ধি
⇨ সামাজিক আচরণে দূরত্ব বা অসহযোগিতা
৫. প্রতিরোধ ও সুস্থতার উপায়:
⇨ নিয়মিত রুটিন: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুম, খাবার ও গোসলের রুটিন বজায় রাখুন।
⇨ সুষম খাদ্য: প্রোটিন, ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন।
⇨ পর্যাপ্ত ঘুম: প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈনিক ৭–৯ ঘন্টা ঘুম অপরিহার্য।
⇨ হাইজিন রুটিন: দৈনন্দিন গোসল ও ব্যক্তিগত যত্ন মানসিক সতেজতা বজায় রাখে।
গোসল, ঘুম ও খাওয়া-প্রতিটি মৌলিক অভ্যাস শারীরিক, মানসিক ও আচরণগত সুস্থতার ভিত্তি। এই অভ্যাসগুলো মানা না হলে শুধু অসুস্থতা নয়, আচরণগত বিপর্যয়ও ঘটতে পারে। তাই ব্যস্ত জীবনেও এই মূল অভ্যাসগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।