জন্মকথা থেকে রান্নাঘর পর্যন্ত-সুশির গল্প ও রেসিপি একসাথে

জন্মকথা থেকে রান্নাঘর পর্যন্ত-সুশির গল্প ও রেসিপি একসাথে
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

সুশি নিয়ে আলোচনা করতে গেলে এর ইতিহাস, সংস্কৃতি ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের পাশাপাশি আজকের বাস্তবতায় সবচেয়ে বড় কৌতূহল হলো এটি কীভাবে তৈরি হয়? জাপানের ঐতিহ্যবাহী রান্নাঘরে যেমন সুশি একটি শিল্প, তেমনি আধুনিক শহুরে জীবনে এটি এক জনপ্রিয় ডিশে পরিণত হয়েছে। কাঁচা মাছ খাওয়া সবার জন্য উপযুক্ত নয়, তাই ঘরে বসে রান্না করা উপাদান দিয়ে তৈরি সুশিও সমান জনপ্রিয়। নিচে সুশির ধরন ও রেসিপি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।

সুশির প্রধান ধরন:

⇨ নিগিরি সুশি (Nigiri Sushi): ছোট চালের বলের উপর মাছ বা সি-ফুডের টুকরো রাখা হয়।

⇨ মাকি সুশি (Maki Sushi): সামুদ্রিক শৈবাল (নরি), চাল ও মাছ/সবজি রোল আকারে পেঁচিয়ে কেটে পরিবেশন করা হয়।

⇨ টেমাকি সুশি (Temaki): হাতে পেঁচানো শঙ্কু-আকৃতির রোল।

⇨ চিরাশি সুশি (Chirashi): চালের উপর বিভিন্ন সবজি ও সি-ফুড সাজানো হয়, সালাদের মতো দেখতে।
 

সুশির মূল উপাদান:

⇨ সুশি চাল (Sushi Rice): ছোট দানার চাল, যা সেদ্ধ করার পর চালের ভিনেগার, চিনি ও লবণ মিশিয়ে আঠালো করা হয়।

⇨ নরি (Nori): শুকনো সামুদ্রিক শৈবাল পাতলা আকারে কাটা থাকে।

⇨ ফিলিংস: সালমন, টুনা, চিংড়ি, কাঁকড়া, অথবা সবজি (শসা, অ্যাভোকাডো, গাজর ইত্যাদি)।

⇨ কন্ডিমেন্টস: ওয়াসাবি (Wasabi), আচার করা আদা (Pickled Ginger), ও সয় সস।
 

সহজ রেসিপি: (যারা কাঁচা মাছ খেতে চান না তাদের জন্য উপযুক্ত)

উপকরণ:

◑ ২ কাপ সুশি চাল

◑ ২ ½ কাপ পানি

◑ ২ টেবিল চামচ রাইস ভিনেগার

◑ ১ টেবিল চামচ চিনি

◑ আধা চা চামচ লবণ

◑ নরি শীট ৪–৫টি

◑ শসা, গাজর, অ্যাভোকাডো লম্বা সরু টুকরো করে কাটা

◑ সয় সস পরিবেশনের জন্য
 

প্রস্তুত প্রণালী:

⇨ চাল ভালোভাবে ধুয়ে নিন, তারপর পানি দিয়ে সেদ্ধ করুন যতক্ষণ না নরম হয়।

⇨ ভিনেগার, চিনি ও লবণ মিশিয়ে গরম ভাতে মেশান।

⇨ বাঁশের সুশি মাদুরে (Bamboo Mat) একটি নরি শীট বিছান।

⇨ নরির উপর পাতলা স্তরে চাল ছড়িয়ে দিন, হালকা চাপ দিন।

⇨ মাঝখানে শসা, গাজর ও অ্যাভোকাডো রাখুন।

⇨ ধীরে ধীরে রোল আকারে পেঁচান এবং ছুরি দিয়ে সমান টুকরো করে কেটে নিন।

⇨ সয় সস ও আচার করা আদার সাথে পরিবেশন করুন।
 

সি-ফুড সুশি বানাতে টিপস-

মাছ বা সি-ফুড ব্যবহার করলে অবশ্যই আগে ফ্রিজে -২০°C তাপমাত্রায় অন্তত এক সপ্তাহ সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে পরজীবী নষ্ট হয়। সালমন, টুনা বা রান্না করা চিংড়ি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। রান্না করা কাঁকড়া বা ইলও নিরাপদ বিকল্প।
 

স্বাস্থ্যগত দিক- 

সুশি চাল শক্তির উৎস, মাছ থেকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, সবজি থেকে ভিটামিন-সব মিলে এটি পুষ্টিকর। তবে সয় সস-এ সোডিয়াম বেশি থাকে, তাই পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। কাঁচা মাছ ব্যবহারের সময় অবশ্যই খাদ্য নিরাপত্তার নিয়ম মেনে চলতে হবে।

বাংলাদেশে বা দক্ষিণ এশিয়ায় সুশি এখন রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায়। স্থানীয়ভাবে হিলসা, রুই বা টেলাপিয়া মাছ রান্না করে ব্যবহার করার চর্চাও হচ্ছে। এছাড়া ভেজিটেরিয়ান বা চিকেন সুশিও জনপ্রিয় হচ্ছে, যা স্থানীয় স্বাদের সাথে সুশির মিশেল ঘটাচ্ছে।

সুশি শুধু কাঁচা মাছ নয়, বরং চাল, সবজি ও বিভিন্ন উপাদানের এক শিল্পিত সমন্বয়। সঠিক উপাদান ও সতর্কতা মেনে ঘরে বসে সুশি বানানো এখন আর কঠিন কিছু নয়।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ