আবেগ লুকানোর খেলায় পুরুষদের মানসিক ও শারীরিক পতন!

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
ছেলেদের ছোটবেলায় শেখানো হয়, "ম্যান আপ করো" বা "ছেলেরা কাঁদে না।" এই সাধারণ বাক্যগুলো প্রায়শই পুরুষদের আবেগ চেপে রাখার একটি জীবনব্যবস্থা তৈরি করে। শুরুতে মনে হতে পারে এটি শক্তি বা ধৈর্যের চিহ্ন, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটি মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য, সম্পর্ক এবং জীবনধারার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। অবচেতনভাবে আবেগ দমন করলে পুরুষরা নিজেকে সামাজিক চাপের মুখোমুখি রাখে, যা বিষণ্ণতা, উদ্বেগ এবং সম্পর্কের দূরত্বের মতো সমস্যার দিকে পরিচালিত করে। এটি শুধু মানসিক নয়, শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং ঘুমের ব্যাঘাত।
পুরুষদের আবেগগত দমনের কারণ-
⇨ সামাজিক নিয়ম ও পুরুষতান্ত্রিক আদর্শ: ঐতিহ্যবাহী সামাজিক কাঠামো পুরুষদেরকে "শক্তিশালী, নিয়ন্ত্রণশীল এবং আবেগহীন" হতে শেখায়। আবেগ প্রকাশকে দুর্বলতার চিহ্ন হিসেবে দেখা হয়।
⇨ পিতামাতার প্রভাব: ছোটবেলায় পিতামাতা প্রায়শই বলে, "ছেলেরা কাঁদে না" বা " কষ্ট দেখায় না।" এতে ছেলে নিজেকে আবেগ প্রকাশে সীমাবদ্ধ রাখে।
⇨ দুর্বলতার ভয়: সমবয়সীদের কাছে দুর্বল বা আলাদা দেখাতে না চাওয়ায় পুরুষরা আবেগ লুকিয়ে রাখে।
⇨ আবেগগত শব্দভান্ডারের অভাব: অনেক পুরুষের কাছে নিজের অনুভূতি সনাক্ত ও প্রকাশ করার ভাষা বা সরঞ্জাম নেই।
মানসিক দমনের পরিণতি-
➤ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা:
◑ দীর্ঘস্থায়ী উদ্বেগ ও বিষণ্ণতা
◑ মানসিক চাপের কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণে দুর্বলতা
➤ শারীরিক স্বাস্থ্য সমস্যা:
◑ উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ঘুমের সমস্যা
◑ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার হ্রাস
➤ সম্পর্কের টানাপোড়েন:
◑ আবেগ প্রকাশে অক্ষমতা দূরত্ব ও দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে
◑ পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক দুর্বল হয়
➤ অস্বাস্থ্যকর মোকাবেলার পদ্ধতি:
◑ রাগ বা আগ্রাসন আবেগ ঢাকার চেষ্টা হতে পারে
◑ মদ্যপান, ধূমপান বা অন্যান্য পদার্থের অপব্যবহার
➤ একাকীত্ব এবং বিচ্ছিন্নতা:
◑ সহায়তা নেটওয়ার্ক সংকুচিত হয়
◑ মানসিক বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি বৃদ্ধি পায়
আবেগগত দমন কাটিয়ে ওঠার কৌশল-
➤ আবেগগত বুদ্ধিমত্তা বিকাশ:
◑ আবেগ চিহ্নিত, নামকরণ ও প্রক্রিয়া করা শেখা
◑ অনুভূতি বোঝার মাধ্যমে মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখা
➤ পেশাদার সহায়তা গ্রহণ:
◑ থেরাপি বা কাউন্সেলিং নিরাপদ পরিবেশে অনুভূতি প্রকাশ ও বোঝার সুযোগ দেয়
➤ পুরুষতান্ত্রিক স্টেরিওটাইপ চ্যালেঞ্জ:
◑ আবেগ প্রকাশ দুর্বলতা নয়, শক্তি হিসেবে বোঝা
◑ সামাজিক প্রচলিত ধারণা পরিবর্তনের প্রচেষ্টা
➤ সহায়ক সম্পর্ক গড়ে তোলা:
◑ বিশ্বস্ত বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে নিজের অনুভূতি ভাগ করা
◑ দুর্বলতার জন্য নিরাপদ পথ তৈরি করা
➤ স্বাস্থ্যকর অভ্যাস:
◑ নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম ও সুষম খাদ্য
◑ ধ্যান ও শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানো
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।