কৃষিতে তরুণদের আইকন হয়ে উঠেছে 'বিসমিল্লাহ এগ্রো'

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
বেকারত্বের দোলাচলে আটকে থাকা তরুণদের জন্য আইকন হয়ে উঠেছে উদ্যোক্তা সাইফের বিসমিল্লাহ এগ্রো। চাকরির পেছনে না ছুটে কঠোর পরিশ্রম ও সততায় স্বনির্ভরতার প্রতীক কৃষি নির্ভর জীবনমুখী এই খামার। কৃষি, অর্থনীতি ও সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের মাধ্যমে তরুণদের কৃষি ভিত্তিক উদ্যোক্তা মনোভাব গড়ে তুলছে ফরিদপুরের বিসমিল্লাহ এগ্রো।
বাংলাদেশের মৌলিক সমস্যাগুলোর মধ্যে “বেকারত্ব” সবচেয়ে প্রকট। প্রতিনিয়ত বাড়ছে বেকারের সংখ্যা। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষে দেশের বেকারের সংখ্যা ২ কোটি ২৬ লাখ ৬০ হাজারে পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ২ লাখ ৬০ হাজার বেশি।
দিনদিন বেকারত্বের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও তরুণদের মধ্যে সরকারি চাকরিপ্রার্থী মনোভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে পড়াশোনা শেষ করার পর অনেকেই ভবিষ্যৎ নিশ্চয়তার আশায় সরকারি চাকরির অপেক্ষায় থাকেন, যেখানে প্রতিযোগিতা তীব্র এবং চাকরির সংখ্যা প্রতিযোগীর তুলনায় অনেক বেশি।
চাকরির বাজারের এমন পরিস্থিতিতে ফরিদপুরের তরুণ উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলামের উদ্ভাবনী খামার “বিসমিল্লাহ এগ্রো” একটি অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদ্যোক্তা সাইফের খামারটি ধান,গম ও অন্যান্য কৃষিজ ফসল চাষ, গরু-ছাগল পালন, মাছ চাষ, কোয়েল পাখি পালন, দুধ, ঘি ও ছানা উৎপাদনসহ বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সাইফের কাজ শুধু ব্যক্তিগত জীবিকা নয়, এটি স্থানীয় অর্থনীতি ও গ্রামীণ উন্নয়নের ক্ষেত্রেও অবদান রাখছে। তার উদ্ভাবনী ও বাস্তবমুখী মানসিকতা তরুণদের চাকরির বাইরে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেও সফল হওয়ার পথ দেখিয়ে যাচ্ছে।
বিসমিল্লাহ এগ্রো খামারটি আনুষ্ঠানিকভাবে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছে। যদিও খামারটি ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে ভিডিও প্রকাশ করা শুরু করে ২০২২ সাল থেকে, তবে সাইফ এর আগেই ব্যক্তিগতভাবে খামারের সব কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়মিত ভিডিও আপলোডের কিছুদিনের মধ্যেই বিসমিল্লাহ এগ্রো তরুণদের নিকট ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক পেজ “Bismillah Agro” তে খামারের কার্যক্রমের নতুন নতুন ভিডিও প্রকাশ করেন।
সাইফ নিজেই খামারের যাবতীয় কাজ তদারকি করেন এবং নিজেও কাজে অংশগ্রহণ করেন। ধান,গম ও অন্যান্য কৃষিজ ফসল চাষ, খামারের গরু-ছাগল গোসল করানো, খাদ্য সংগ্রহ, দুধ দোহন ও ঘি তৈরি করা, মাছ চাষ এবং কোয়েল পাখি পালন, এসব কাজের সঙ্গে খামারের যুবকরা সরাসরি যুক্ত থাকেন। এই অভিজ্ঞতা তরুণদের বাস্তবমুখী মনোভাবকে জাগ্রত করছে এবং তাদেরকে স্বনির্ভর ও আত্মবিশ্বাসী করে তুলছে।
খামারের অর্থনৈতিক প্রভাব টেকসই এবং স্থায়ী। উৎপাদিত মৌসুমি ফসল, পশু ও খামারে উৎপাদিত পণ্য স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয়, যা অর্থনৈতিক উৎপাদন বৃদ্ধি করছে। স্থানীয় যুবকদেরকে নিয়োজিত করার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং কৃষি খাতে যুবসমাজকে উৎসাহিত করছেন সাইফ।
তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য বিসমিল্লাহ এগ্রো একটি মডেল। লাখ লাখ তরুণ উদ্যোক্তা বিসমিল্লাহ এগ্রোর কার্যক্রম দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছে। সাইফ প্রমাণ করেছেন যে, সৃজনশীলতা, সততা, এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তরুণরা চাকরির অপেক্ষা না করে নতুন উদ্যোগ ও কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে। স্ব-উদ্যোগী এবং উদ্যোক্তা হিসেবে দেশের অর্থনীতি ও সমাজকে সমৃদ্ধ করতে বিসমিল্লাহ এগ্রোর ভূমিকা অনন্য।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।