সবাই কোডে ব্যস্ত, কিন্তু এআই-এর ভবিষ্যত কি ধরা যাবে ফিজিক্স ও ম্যাথ ছাড়া? উত্তর শুনে চমকে উঠবেন!

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে চলছে এক অভূতপূর্ব বিপ্লব। এক সময় মনে করা হতো-ভালো একজন প্রোগ্রামার মানেই এআই-র দুনিয়ায় দক্ষ। কিন্তু বাস্তবতা এখন একেবারেই ভিন্ন। ইলন মাস্ক থেকে শুরু করে এনভিডিয়ার প্রেসিডেন্ট জেনসেন হুয়াং পর্যন্ত বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তিবিদরা স্পষ্টভাবে বলছেন-"এআই-এর ভবিষ্যতকে এগিয়ে নিতে হলে কোডিং যথেষ্ট নয়, লাগবে পদার্থবিজ্ঞান ও গণিত।"
কেন কোড যথেষ্ট নয়!
একটি সাধারণ সফটওয়্যার বানাতে কেবল কোডিং দক্ষতাই যথেষ্ট। কিন্তু যখন সেই সফটওয়্যারকে এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যেন সেটা রোবটের মতো শুনতে, দেখতে, হাঁটতে বা চিন্তা করতে পারে, তখন প্রয়োজন পড়ে পদার্থবিজ্ঞানের নিয়ম আর গণিতের নির্ভুল হিসাব।
উদাহরণস্বরূপ, চ্যাটজিপিটি কাজ করে টেনসর (বহুমাত্রিক ম্যাট্রিক্স) ব্যবহার করে। এই টেনসর হতে পারে টুডি, থ্রিডি বা আরও উচ্চমাত্রিক, যেখানে হাজার হাজার সারি ও কলাম থাকে। মডেল সেখান থেকে ভেক্টর রিপ্রেজেন্টেশন হিসেব করে, নির্দিষ্ট ইনপুটের সঙ্গে সবচেয়ে মানানসই ডেটা মিলিয়ে দেয় এবং একটি প্রাঞ্জল আউটপুট উপস্থাপন করে। এই পুরো প্রক্রিয়ার মূলে রয়েছে লিনিয়ার অ্যালজেব্রা, সম্ভাব্যতা, অপটিমাইজেশন এবং নিউমেরিক্যাল মেথডস।
এআই-এর পেছনে বিজ্ঞানের উপস্থিতি-
☞ গণিত → সম্ভাব্যতা (Probability), লিনিয়ার অ্যালজেব্রা, ক্যালকুলাস, গ্রাফ থিওরি, অপ্টিমাইজেশন—এসব ছাড়া কোনো এআই অ্যালগরিদমই সম্ভব নয়।
☞ পদার্থবিজ্ঞান → শব্দ বিশ্লেষণে ধ্বনিতরঙ্গ ও ওয়েভ ইকুয়েশন, চিত্র বিশ্লেষণে জ্যামিতি ও অপটিক্স, রোবটিকসে মেকানিক্স ও ডাইনামিক্স, স্বয়ংক্রিয় গাড়িতে নিউটনের গতিসূত্র থেকে শুরু করে কন্ট্রোল থিওরি পর্যন্ত সবকিছু কাজে লাগছে।
☞ নিউরোসায়েন্স ও বায়োফিজিক্স → মানুষের মস্তিষ্ক কীভাবে শিখে, সেটি অনুকরণ করেই বানানো হচ্ছে নিউরাল নেটওয়ার্ক।
বাস্তব জীবনের প্রয়োগ:
⇨ স্বয়ংক্রিয় গাড়ি (Autonomous Car): শুধু ক্যামেরা বা সেন্সরের ছবি বিশ্লেষণ নয়, গাড়ির ভারসাম্য রক্ষা, রাস্তার ঘর্ষণ, বাঁক নেওয়ার সময় গতি পরিবর্তন সবকিছুই পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মে নিয়ন্ত্রিত।
⇨ রোবটিকস: একটি রোবটকে হাঁটানো মানেই নিউটনীয় মেকানিক্স, ডাইনামিকস, ওজন বন্টন আর ভারসাম্যের জটিল সমাধান।
⇨ স্পিচ রিকগনিশন: মানুষের কণ্ঠস্বরকে এআই বুঝতে পারে ধ্বনিতরঙ্গ বিশ্লেষণ করে, যা সরাসরি ফিজিক্সের বিষয়।
⇨ মেডিকেল ইমেজিং এআই: এক্স-রে, এমআরআই বা সিটি-স্ক্যান বিশ্লেষণে এআই ব্যবহার করে ওয়েভ প্রপাগেশন, ফুরিয়ার ট্রান্সফর্ম এবং লিনিয়ার অ্যালজেব্রা।
জেনসেন হুয়াং সম্প্রতি বলেছেন "আমি যদি আজকের দিনে তরুণ হতাম, তাহলে কম্পিউটার সায়েন্স নয়, বরং পদার্থবিজ্ঞানই পড়তাম।" তাঁর মতে, ভবিষ্যতের এআই নেতৃত্ব দেবে সেই প্রজন্ম, যারা কোড লিখতে জানার পাশাপাশি প্রকৃতিকে বোঝে এবং সমীকরণ দিয়ে সমস্যার সমাধান করতে পারে।
এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি নয়, বরং বিজ্ঞানের জটিল এক সমন্বয়। প্রোগ্রামিং হলো এর ভাষা, কিন্তু চালিকা শক্তি হলো পদার্থবিজ্ঞান আর গণিত। ভবিষ্যতের এআই বিপ্লবে তাই তরুণদের জন্য বার্তা একটাই শুধু কোড নয়, বিজ্ঞানও শিখতে হবে গভীরভাবে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।