বিশ্বের সবচেয়ে বড় মরুভূমি সাহারা নয়! আসল উত্তর শুনলে চোখ কপালে উঠবে

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
আমাদের মনে মরুভূমি মানেই তপ্ত বালির টিলা, গরম হাওয়া আর পানির জন্য হাহাকার। কিন্তু বিজ্ঞানীরা মরুভূমি সংজ্ঞায়িত করেন ভিন্নভাবে-যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ২৫০ মিলিমিটারের (১০ ইঞ্চি) কম, এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীজীবন টিকে থাকার জন্য যথেষ্ট পানি পায় না, সেটাই মরুভূমি। এই সংজ্ঞা অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে বড় মরুভূমি সাহারা নয়, বরং অ্যান্টার্কটিকা!
অ্যান্টার্কটিকা, যেখানে তুষার থাকলেও বৃষ্টিপাতের অভাব ও চরম শুষ্কতার কারণে এটি প্রকৃত মরুভূমি হিসেবে বিবেচিত।
মরুভূমিকে ২ ভাগে ভাগ করা হয়-
১। উষ্ণ মরুভূমি: যেমন সাহারা, গোবি, তাতারি, যা সাধারণত বালুকাবিশিষ্ট, গরম ও শুষ্ক।
২। শীতল মরুভূমি: যেমন অ্যান্টার্কটিকা ও আর্কটিক, যেখানে তাপমাত্রা অত্যন্ত কম কিন্তু বৃষ্টিপাতও খুব কম।
অ্যান্টার্কটিকা পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মরুভূমি!
⇨ আয়তন: প্রায় ১৪ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার, যা পৃথিবীর মোট ভূমির প্রায় ৯.৫%।
⇨ বৃষ্টিপাত: গড়ে ৫০ মিমি বা তার কম (বরফ আকারে), পৃথিবীর সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাতের স্থানগুলোর মধ্যে একটি।
⇨ তাপমাত্রা: শীতকালে গড়ে -৪০ থেকে -৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা পৃথিবীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড।
⇨ শুষ্কতা: শুষ্ক বায়ুর কারণে বরফ ছাড়াও জলীয় বাষ্প খুবই কম।
⇨ বায়ু প্রবাহ: এখানে প্রবল ঝড় বয়ে যায়, বাতাসের গতি ঘণ্টায় ২০০ কিমি ছাড়িয়ে যেতে পারে।
যেকারণে অ্যান্টার্কটিকা মরুভূমি হিসেবে গণ্য হয়-
⇨ বৃষ্টিপাতের অভাব: শীতল আবহাওয়া হলেও এখানে বৃষ্টিপাত অত্যন্ত কম। বরফ থাকলেও বৃষ্টি প্রায় হয় না, বরফ গলেই জলীয় বাষ্প আকারে বাতাসে চলে যায়।
⇨ অত্যন্ত শুষ্ক বাতাস: মস্ত বায়ু শুষ্কতার মাত্রা বজায় রাখে, ফলে বরফ গললেও পর্যাপ্ত আর্দ্রতা থাকে না।
⇨ উদ্ভিদ ও প্রাণীজীবনের স্বল্পতা: এই অঞ্চলে গাছপালা ও প্রাণী খুবই কম, সাধারণত মাইক্রোবস আর লিচেন ছাড়া।
মজার কিছু তথ্য
⇨ ড্রাই ভ্যালি, অ্যান্টার্কটিকা: পৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক জায়গাগুলোর মধ্যে একটি, যেখানে ২০ লক্ষ বছর ধরে বৃষ্টি হয়নি।
⇨ সাহারার তাপমাত্রা: দিনে গরম বেশি হলেও রাতের তাপমাত্রা অনেক কমে যায়, যা মরুভূমির অন্য বৈশিষ্ট্য।
⇨ আর্কটিক মরুভূমি: অ্যান্টার্কটিকার পর দ্বিতীয় বৃহত্তম শীতল মরুভূমি, উত্তর মেরুর বরফময় অঞ্চল।
মরুভূমির গুরুত্ব ও পরিবেশগত প্রভাব-
মরুভূমির শুষ্ক পরিবেশ পৃথিবীর জলবায়ুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শীতল মরুভূমিগুলো (অ্যান্টার্কটিকা ও আর্কটিক) পৃথিবীর তাপমাত্রা ও সাগরের লেভেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। মরুভূমির পরিবেশগত পরিবর্তন জলবায়ু পরিবর্তনের সূচক হিসেবে কাজ করে।
মরুভূমির প্রচলিত ধারণাকে বদলে দিয়েছে আধুনিক বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা। বরফে ঢাকা ঠান্ডা অ্যান্টার্কটিকাই প্রকৃতপক্ষে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মরুভূমি। এই তথ্য আমাদের পৃথিবীর পরিবেশ ও জলবায়ুর গভীর রহস্য উন্মোচনে সাহায্য করে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।