প্লাস্টিক দূষণ ঠেকাতে বৈশ্বিক চুক্তির পথে ১৮০ দেশ

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
বিশ্বজুড়ে প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা ঠেকাতে বাধ্যতামূলক একটি বৈশ্বিক চুক্তির পথে এগোচ্ছে প্রায় ১৮০টি দেশ। এই লক্ষ্যে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ১০ দিনের আন্তর্জাতিক আলোচনা শুরু হয়েছে। জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা ইউএনইপি’র উদ্যোগে আয়োজিত এ বৈঠকে প্রতিনিধিরা একটি কার্যকর চুক্তির বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছাতে কাজ করছেন। ২০২২ সালে দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ২০২৪ সালের মধ্যে একটি বাধ্যতামূলক চুক্তি করা হবে, কিন্তু ২০২৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে আয়োজিত আলোচনায় বড় ধরনের মতবিরোধের কারণে অগ্রগতি থেমে যায়।
বিশ্বে বছরে প্রায় ৪৬ কোটি টন প্লাস্টিক উৎপাদিত হয়, যার অর্ধেকই একবার ব্যবহারযোগ্য। অথচ মাত্র ১০ শতাংশেরও কম পুনর্ব্যবহার করা হয়। মাইক্রোপ্লাস্টিক কণাগুলো ইতোমধ্যে মানবদেহেও প্রবেশ করেছে, যার স্বাস্থ্যঝুঁকি এখনও স্পষ্ট নয়। ইউএনইপি জানিয়েছে, ২০৪০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য মাটি ও পানিতে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।
চুক্তিতে সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয় হলো—নতুন প্লাস্টিক উৎপাদনে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে কিনা। সৌদি আরব, রাশিয়া, ইরানসহ তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো এর বিরোধিতা করছে। পাশাপাশি পিএফএএস জাতীয় ‘ফরএভার কেমিক্যালস’-এর নিয়ন্ত্রণ নিয়েও দ্বিধা রয়েছে। খসড়া নথিতে এখনো প্রায় ৩০০টি অস্পষ্ট বা বিরোধপূর্ণ বিষয় রয়ে গেছে।
তবে অনেক দেশ, বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্র, ছোট দ্বীপ রাষ্ট্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলো কঠোর ও বিস্তৃত চুক্তির পক্ষে। তাদের দাবি, শুধু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নয়, বরং প্লাস্টিক উৎপাদন, ব্যবহার ও নিষ্পত্তির প্রতিটি ধাপ নিয়েই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাঠামোগত চুক্তির পাশাপাশি অর্থায়ন, বাস্তবায়ন ও কঠোর প্রয়োগ ছাড়া এই উদ্যোগ কার্যকর হবে না। না হলে, এটি কেবল কাগুজে প্রতিশ্রুতিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।