অধিভুক্ত বাতিলের দাবিতে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

অধিভুক্ত বাতিলের দাবিতে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অধিভুক্ত বাতিল করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি) গঠনের একদফা দাবিতে ময়মনসিংহে টানা ৪ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ, বুধবার (৯ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নগরীর রহমতপুর বাইপাস, মুক্তাগাছা ও টাঙ্গাইল সড়কে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

শিক্ষার্থীদের এই অবরোধের ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। এসময় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করেও শিক্ষার্থীরা সড়কের ওপর অবস্থান নেন।

খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলম, পুলিশ সুপার এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তারা শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি পূরণে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।

জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলম শিক্ষার্থীদের বলেন, "আপনাদের যৌক্তিক দাবি পূরণে আমি আজকেই বিষয়টি শিক্ষা উপদেষ্টাকে লিখিতভাবে অবহিত করব। আশা করছি, আপনারা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করে ধৈর্য ধরবেন।"

এরপর কয়েক দফায় আলোচনার পর অবশেষে বিকেল ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ থেকে সরে যান।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিবিরুল ইসলাম জানান, এর ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

শিক্ষার্থী রবিন মোল্লা সাংবাদিকদের জানান, "জেলা প্রশাসক শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে দাবি পূরণে বৈঠকের মধ্যস্থতার আশ্বাস দিয়েছেন। এজন্য তিনি আগামী সোমবার পর্যন্ত আমাদের কাছে সময় চেয়েছেন। আমরা প্রশাসনের আশ্বাসের বিষয়টি বিবেচনা করে আপাতত আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেছি। আশা করছি, সরকার আমাদের দাবি পূরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অন্যথায় আবারও আমরা রাজপথে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।"

এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম, সিবাজী রায় মিদুল, আশরাফ আল সাগির, আল আমিন, সুমাইয়া সেলিম মিম প্রমুখ।
কামরুল ইসলাম বলেন, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কাঠামো আমরা চাই না। অবিলম্বে বিআইটি গঠন না করা হলে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলছে।"

প্রসঙ্গত, গত ১৮ মে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ধ্রুবজিৎ কর্মকার (২৩) চলমান শিক্ষাব্যবস্থাকে দায়ী করে আত্মহত্যা করেন। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর গত ২০ মে থেকে শিক্ষার্থীরা অ্যাকাডেমিক কম্বাইন্ড সিস্টেম বাতিলের দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ঈদের পর গত ১৪ জুন প্রতিষ্ঠান খোলা হলেও পাঠ ও পরীক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেননি শিক্ষার্থীরা। এরপর ২৪ জুন থেকে কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়ায় প্রশাসনিক কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে।
সর্বশেষ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে না নেওয়ায় গত ৫ জুলাই থেকে বিআইটি গঠনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন তারা, তারই ধারাবাহিকতায় আজকের সড়ক অবরোধ।


সম্পর্কিত নিউজ