শিক্ষার্থীদের ফাস্ট ফুড অভ্যাস বনাম পুষ্টি শিক্ষা

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
বর্তমান সময়ে দ্রুতগামী জীবনের চাপ এবং সহজলভ্যতার কারণে শিক্ষার্থীদের খাদ্যাভ্যাসে ফাস্ট ফুডের ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পিজ্জা, বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ফ্রায়েড চিকেনের মতো খাবাররা স্বল্পসময়ে শরীরের ক্ষুধা মেটাতে অতি কার্যকর হলেও, দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব নানারকম স্বাস্থ্যঝুঁকি হিসেবে পরিণত হচ্ছে।
ফাস্ট ফুড সাধারণত উচ্চমাত্রায় তেল, ট্রান্স ফ্যাট, লবণ ও চিনি সমৃদ্ধ। এই ধরনের খাবার দ্রুত ক্যালোরি সরবরাহ করে, কিন্তু প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ এবং খাদ্যতন্তু (ফাইবার) থেকে সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত। এই অনুপাতে খাদ্য গ্রহণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্থূলতা, রক্তচাপ বৃদ্ধি, ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, হৃদরোগসহ একাধিক বিপদজনক রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
বিশেষ করে শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের জন্য পুষ্টির সঠিক মাত্রা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সময় শরীর ও মস্তিষ্ক বিকাশের জন্য প্রয়োজন পরিমিত পুষ্টি। কিন্তু পুষ্টি শিক্ষার অভাব, পারিবারিক ব্যস্ততা এবং সামাজিক প্রভাবের কারণে অনেক শিক্ষার্থী পুষ্টি বিষয়ক সচেতনতা থেকে বিচ্ছিন্ন। তারা ফাস্ট ফুডকে ঝুঁকি হিসেবে না দেখে এক ধরনের ফ্যাশন, স্বাদ এবং সহজলভ্যতার প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিক্ষার্থী নিয়মিত পুষ্টি শিক্ষার আওতায় থাকে, তারা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে বেশি সক্ষম হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুষ্টি শিক্ষার অন্তর্ভুক্তি হলে কেবল খাদ্যের মূল্যায়ন নয়, কিভাবে খাদ্য নির্বাচন করতে হবে এবং শরীরের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস গঠন করতে হবে-এই জ্ঞানও বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া, পরিবার ও সমাজকেও আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। ঘরে সুস্থ খাবারের প্রবর্তন, ফাস্ট ফুডের প্রতি সীমাবদ্ধতা আরোপ এবং স্বাস্থ্যকর বিকল্পের প্রচার-প্রসারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সরকার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যৌথ উদ্যোগ নিয়ে সচেতনতা মূলক কার্যক্রম গ্রহণ করলে শিক্ষার্থীদের খাদ্যাভ্যাসে ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব।
সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য আজ থেকেই শিক্ষার্থীদের পুষ্টি সচেতনতা বৃদ্ধি করাই একান্ত জরুরি। ফাস্ট ফুডের স্বাদে মুগ্ধ হয়ে শরীরের পুষ্টিহীনতায় পড়া যেন তাদের জীবনের অভিসন্ধি না হয়ে ওঠে, সেজন্য প্রয়োজন যৌক্তিক শিক্ষা ও সচেতনতা।