ইরানের ক্ষমতা পালাবদলের নেপথ্যে পশ্চিমা চক্রান্ত

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
গত সপ্তাহজুড়ে বিদেশি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের প্রসঙ্গ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। তবে ইতিহাস আমাদেরকে দেয় ভিন্ন বার্তা। ইরাক ও লিবিয়ায় যেমন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর হস্তক্ষেপ ছিল, তেমনি ইরানের ক্ষেত্রেও এমন অভিজ্ঞতা রয়েছে। ১৯০০-এর দশকের গোড়ায় ব্রিটিশরা ইরানের তেল শিল্প নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং গড়ে তোলে অ্যাংলো-ইরানিয়ান অয়েল কোম্পানি, যা পরবর্তীতে ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম নামে পরিচিত হয়।
ইরানের তেল রফতানি থেকে লন্ডন দ্বিগুণ রাজস্ব পেতে থাকে, যা ইরানিদের মাঝে অসন্তোষ তৈরি করে। ১৯৫০-এর দশকে জাতীয়তাবাদী নেতা ড. মুহাম্মদ মোসাদঘ ক্ষমতায় আসেন। তিনি শাহের ক্ষমতা কমিয়ে ইরানের তেল শিল্প জাতীয়করণের উদ্যোগ নেন। এই পদক্ষেপ ইরানে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার প্রতীক হলেও ব্রিটেনের কাছে তা ছিল হুমকি। ১৯৫৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ব্রিটিশরা মোসাদঘকে ক্ষমতাচ্যুত করে এবং রেজা শাহকে ক্ষমতায় বহাল করে। রেজা শাহ ক্ষমতার লোভে রক্তের নেশায় মত্ত হয়, বিনিময়ে প্রাণ দিতে হয় ইরানি জাতীয় চেতনায় বিশ্বাসী জনতার।
এর ফলে ইরানে পশ্চিমা বিরোধী মনোভাব আরও দৃঢ় হয়ে ওঠে। জনমনে গেঁথে যায় যে ইরান একটি পশ্চিমা পুতুল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এসব ক্ষোভ জমতে জমতে ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবে রূপ নেয়। রাজতন্ত্রের পতনের মধ্য দিয়ে একটি নতুন সরকার গঠিত হয়, যার মূলে ছিল পশ্চিমা হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ। ইতিহাসের এই ঘটনা পরবর্তীতে মার্কিন প্রশাসনের অনেকেই "বিপত্তি" হিসেবে স্বীকার করে। এই অভিজ্ঞতা ইরানের জাতীয় চেতনায় এখনও গভীরভাবে প্রোথিত রয়েছে।